rinmukto_duniya_o_papmukto_porokal

আমরা ঋণমুক্ত দুনিয়া ও পাপমুক্ত পরকাল বলতে বুঝাতে চেয়েছি যে, একজন মানুষ তার ব্যক্তিগত জীবনে যে ঋণগ্রহণ করে তা থেকে শুরু করে, তার জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে যত হকদারের হক বা অধিকার আছে, অর্থাৎ মানুষের হক আল্লাহর হক তাঁর কিতাবের হক রাসূল (সা.) এর হক বা অধিকার আছে এবং ঈমান, ইসলাম, নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, ইনসাফ, জিহাদ, ইকামতে দ্বীনের দায়িত্ব পালনসহ সামাজিক দায়-দায়িত্ব, পরিবেশ, জীবজন্তু কীট-প্রতঙ্গের হক বা অধিকার আছে তা আদায় করার মাধ্যমেই দুনিয়ার জীবনে ঋণমুক্ত হওয়া যাবে।
দুনিয়ার জীবনে সব কিছুর হক যথাযথভাবে আদায় করতে পারলেই পরকালেও পাপমুক্ত হওয়া যাবে ইনশাল্লাহ। আর পরকালে পাপমুক্ত হতে পারলেই জান্নাতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। যে ব্যক্তি মুসলিমের হক নষ্ট করবে সে আল্লাহর সঙ্গে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করবেন যে তিনি তার ওপর রাগান্বিত থাকবেন। যদি তা সামান্য কোনো বন্ধু হয় কিংবা গাছের একটি ডালও হয়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিষয়টি হাদীসে সুস্পষ্ট করেছেন এভাবে- হযরত আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কসমের মাধ্যমে কোনো মুসলিমের হক বিনষ্ট করে তার জন্য আল্লাহ জাহান্নাম ওয়াজিব করে রেখেছেন এবং জান্নাত হারাম করে রেখেছেন। (নাউজুবিল্লাহ) তখন এক সাহাবি জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! অতি সামান্য বস্তু হলেও।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আরাক (বাবলা গাছের মতো এক ধরনের কাঁটাযুক্ত) গাছের ডাল হলেও এ শাস্তি দেয়া হবে।’ (মুসলিম)

মুসলিমের হক নষ্ট করা পাপের কাজ। তদুপরি মিথ্যা কসম খেয়ে কারো হক নষ্ট করা মহাপাপ। যার শাস্তি হবে জান্নাত হতে বঞ্চিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ। সে হক ছোট হোক আর বড়ই হোক। তাকে শাস্তি ভোগ করতেই হবে। কেননা সে ইসলামের হক উপলব্ধি করেনি এবং আল্লাহর নামের মর্যাদাও রক্ষা করেনি। অত্যাচার বা জুলুম হলো সমস্ত অমঙ্গলের উৎস যা ন্যায় বিচার থেকে এবং সমস্ত কল্যাণ থেকে মানুষকে দূরে রাখে। যখন কোনো জাতির মধ্যে জুলুম নির্যাতন বেড়ে আইনের শাসন ভূলুণ্ঠিত হয়, তখন এর প্রভাবে শহর নগর, গ্রাম থেকে গ্রামান্তর সবই ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই প্রকৃত ইসলাম ধর্ম মানুষের অধিকার মেরে দেয়া হারাম করে দিয়েছে। মহান আল্লাহ আমাদেরকে হায়াতে জীবনে ইসলামের নির্দেশ অনুযায়ী সব বিধি বিধান মেনে চলার তাওফিক দান করুন এবং সকল কর্মকান্ড আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের খুশী মত যথাযথ হক আদায় করে ঋণমুক্ত থাকার তৌফিক দিন।